আমার প্রেরণায় হযরত ওমর (রা:)

 

মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে কোটি শুকরিয়া যিনি দয়াময় হয়ে আমাদেরকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উম্মত হিসাবে প্রেরণ করেছেন। রাসুলের উম্মতগণের মাঝে অন্যতম সেরা ব্যাক্তিত্ব মুসলিম জাহানের ২য় খলিফা, প্রেসিডেন্ট হযরত ওমর (রা)। যেমন দু:সাহস, তেমনি মেজাজ, জ্ঞান, নৈতিকতা ও শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা। হযরত ওমরের  ব্যাপারে ররসুলুল্লাহ (স) এত হাদিস আছে যে এক লেখায় সেটি ফুটিয়ে তোলা অসম্ভব। তিনিই সেই ব্যক্তি যিনি ইসলাম গ্রহণের কথা সর্বপ্রথম সবার সম্মুখে উচ্চারণ করেছেন, ঘোষণা দিয়ে হিজরত করেছেন, আবু বকর (রা) কে খিলিফা হিসাবে মেনে নেয়ার ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত ও বায়আত ছিল যুগান্তকারী। লক্ষ লক্ষ সাহাবীর মধ্যে তিনি একমাত্র যার সিদ্ধান্তের সমর্থনে আল কোরআনের ২২ টি আয়াত নাজিল হয়েছে। তিনি একই সংগে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোরতম এবং সত্যের পক্ষে অবিচল।  তাই রাসুলুল্লাহ (স) তাকে ফারুক তথা সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী উপাধি দিয়েছেন। খলিফার দায়িত্ব গ্রহণের পর তার নমনীয়তা, প্রয়োজনে আগের চেয়ে বেশি কঠোরতা, রাতে বিচরণ করে নাগরিকদের দেখভাল করা, সুবিধা-অসুবিধা জেনে তাৎক্ষণিক সমাধান প্রদান, বিচার ব্যবস্থা, জননিরাপত্তায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সীমান্তবাহিনী গঠন, ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থার প্রসার, প্রদেশ ব্যবস্থা প্রবর্তন, প্রশাসক নির্বাচন, হিজরি সাল প্রবর্তন সহ অসংখ্য জনপ্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহণ তার শাসনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তিনি একই সংগে ছিলেন ইবাদত তন্ময়ী। রাতে দীর্ঘ সময় তাহাজ্জুদ পড়া তার অন্যতম উদাহরণ। কম আহার গ্রহণ, সাধারন চলাফেরা, খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পরও বেতন গ্রহণ না করা, তারাবীহ সালাত জামাতের সাথে ২০ রাকাত আদায়ের ব্যবস্থা প্রচলন তার পারসোনালিটিকে শ্রেষ্ঠর মর্যাদা দিয়েছে।  

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে জানা যায় রাসুলুল্লাহ (স) এর সাথে সার্বক্ষণিক যেকজন সাহাবী সময় দিতেন ওমর তাদের একজন। রাসুলুল্লাহ (স) এর ইন্তিকালের পর তিনি প্রতিদিন তার রওজা জিয়ারত করে কাজে যেতেন আর রাতে ঘরে ফিরার সময় আবার রওজার সামনে দাড়িয়ে শিশুর মত কান্না করতেন৷ জীবনের শেষ দিনগুলোতে বেশি বেশি তওবা করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। ফজরের নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় শত্রুর আঘাতে মুমূর্ষু অবস্থায় যখন তলপেট ছিদ্র হয়ে গেল, তিনি অজ্ঞান হয়ে গেলেন। জ্ঞান ফিরার পর তিনি হযরত আয়িশা (রা) এর অনুমতি নিলেন যেন তার দুই সাথীর পাশে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুর আগ মুহুর্তে ছেলে আবদুল্লাহকে বললেন আমার মাথা তোমার কোল থেকে মাটিতে রাখো যাতে আমার দুর্বল অবস্থা দেখে আল্লাহর মায়া হয় তিনি আমাকে ক্ষমা করে দেন। শাহাদাতের পর হযরত ওমর (রা) কে নবীজী (স) এর বাম পাশে দাফন করা হয়। 

আমরা কত কত বীরের কথা বলি। শাসকের কথা বলি। ভেবে দেখেছি ওমর কোন মাপের বীর? কেমন শাসক(!!)। তার প্রতিটি কথা,  কাজ আমার হৃদয়ের ভিতর আলোড়ন তুলে। হে আরশের মালিক! হযরত ওমরের মর্যাদা আরো বাড়িয়ে দিন। আমাকে ও আমার পরিবারকে তার অনুসরণে বিচক্ষণ, মেজাজী, ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, আবেদ ও শহীদের মর্যাদা দান করুণ। আমীন।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

Who is Muhammad (sm)

Japan and atomic bomb.