রমজানের বাজার ও আমার অভিজ্ঞতা
রমজানের বাজার ও আমার কিছু অভিজ্ঞতা
ইসরাইল স্বঘোষিত মুসলিম বিরোধী একটি দেশ৷ যদিও তারা ব্যবসার প্রফিট গুনে মুসলিম দেশে ব্যবসা করেই। তথাপি গত বছর তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেখেছিলাম যে রমজান উপলক্ষে তারা সকল জিনিসের দাম ১৫% কম করে দিয়েছিল৷ এ বছর গাজায় হামলা চালিয়ে গেলেও ইসরাইলী মুসলিমদের জন্য একই ব্যবস্থা রেখেছে। আরব দেশগুলোতে দাম কমানোর হিড়িক পড়ে যায় রোজা আসলে। ব্যতিক্রম শুধু হাজার আউলিয়া, মসজিদের শহর, ওয়াজের দেশ, প্রচুর দেশপ্রেমিকের দেশ বাংলাদেশ। এখানে রমজান আসলে বাজার চলে যায় ফেরাঊনের পদ্ধতিতে(?!)
ফেসবুকে কিছুদিন দেখলাম কতিপয় লোকের স্ট্যাটাস। যেখানে কম বাজার করার ও অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে যেসব পণ্যের সেগুলো না কেনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমিও খুশি সেটা মেনে চলার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম৷ তবে জীবনে এই প্রথমবার বাজার মনিটর করলাম৷ গাজীপুরের সালনা বাজার মোটামুটি বিখ্যাত ফ্রেশ পণ্যের জন্য। যদিও ফ্রেশ বানানেও বাংলিশ এর ভেজাল লক্ষ্যণীয়। গত বৃহস্পতিবার ছিল হাটের দিন৷ অথচ জিনিসপত্রের দাম ছিল আকাশচুম্বী।
যেমন : শসা-১০০/-, পেয়াজ -১২০/; বেগুন-৮০/-, তরমুজ - ১০০/- কেজি (ভয়ংকর ব্যাপার!!)। ভয়ে আমি কিছুই কিনলাম না আলু ছাড়া। (আলু- ৩০/-)।
লোকজন ও দাম জিজ্ঞাসা করে কিন্তু কেনাকাটার পরিমান খুব কম। পরের দিন শুক্রবার আবার বাজারে গেলাম। দাম এখন সব কছুতেই ২০-৩০ টাকা কম। শনিবার আরো কম। রবিবার অর্থাৎ আজকে বাজারে এসে আমি তো শিহরিত (জনৈক স্লো-মোশন বক্তার মত)। ডেকে ডেকে বিক্রি করছে শসা-৫০/-, পেয়াজ-৬০/-, বেগুন-১০/- তরমুজ -৫০ টাকা। আজও কিন্তু হাট ছিল। কি অসাধারণ পার্থক্য। এক দোকানীকে জিজ্ঞাসা না করে পারলাম না - "ভাই দুইতিন দিনের মধ্যে দাম এতো কমলো কেমনে???" "ভাই মানুষ কিপটা হইয়া গ্যেছে, কম কিনতাছে, আমাগো তো লস আর লস।"
কি বুঝলেন পাঠক? জনগণের শক্তি কতটা মজবুত! তাহলে এভাবেই হোক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সামাজিক প্রতিবাদের আহবান। আর বাস্তবে হোক সেটার প্রতিফলন সকল অন্যায় আর গোড়ামী, গুন্ডামীর বিরুদ্ধে। তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেমন ঠিক হয়ে যাবে তেমনিভাবে অসাধু, ভন্ড, বাটপার
দেশপ্রেমিকরাও আছাড় খাবে। শপথ নেই রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের এভাবেই শিক্ষা দিবো। আর রমজান থেকে শিক্ষা নেই - সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক প্রতিবাদের।
Comments
Post a Comment