দেশপ্রেম : আফগানিস্তান ও আমরা
মনে পড়ে? খালি পায়ে,ছেঁড়া জুতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ফ্লোরে আসন দিয়ে বসে কোরআন তেলাওয়াত করছে আফগান তালেবানরা।
সারা বিশ্বে যাদের পরিচয় করানো হয়েছিল জঙ্গি হিসেবে। ২০২১ সালে এই জঙ্গি তালেবানদের পায়ের তলায় ন্যাটোর সর্বোচ্চ প্রশিক্ষিত সৈন্যরা নাকে ক্ষত দিয়ে আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে আসে। তারপর শুরু হয় তালেবান এর শাসন ক্ষমতা। প্রচন্ড অর্থাভাব,চরম খাদ্য সংকট, অবকাঠামোগত ভয়াবহ ভঙ্গুর অবস্থা, মুদ্রাস্ফীতি,আফিম চাষ,দীর্ঘ ২০ বছরের একটানা যুদ্ধ সব মিলিয়ে একটি প্রচন্ড দুর্বল আফগানিস্তান। তাহলে কিভাবে ঘুরে দাড়ালো ওরা ?
১. আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা
২.খাঁটি দেশপ্রেম
৩.দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স
৪.সময় উপযোগী নীতি
৫.ব্যয় সংকোচন
৬.কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি ও
৭.সততা
যে আফগানিস্তান দাতা সংস্থার খাদ্যের উপর নির্ভরশীল ছিল তারা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও পছন্দনীয় কোমল পানীয় পামীর কোলা ও শাফা কোলা উৎপাদন করছে। যা ডালিম ও আঙ্গুর থেকে তৈরি। মজার বিষয় হচ্ছে এর সবচেয়ে বড় ক্রেতা খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭৩ পরবর্তী সময় থেকে যে তালেবানরা ক্ষমতার জন্য অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে ছিল তারা নিজেদের বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞান ও একতার উদাহরণস্বরূপ তৈরি করছে বিশ্বের অন্যতম বড় কুশ টেপা খাল। যা ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১১৫ মিটার প্রস্থ ও ৮.৫ মিটার গভীর। যার ১০০ কিলোমিটারের বেশি খনন হয়ে গেছে মাত্র ১০ মাসে। আচ্ছা এ দেশে হলে কত সময় লাগতো?
জানেন তো পাঠক? আফগানিস্তানের রিজার্ভের ৯.৫ মিলিয়ন ডলার আটকে দিয়েছিল আমেরিকা এবং ইউরোপীয়রা। একই সাথে তালেবান পূর্ববর্তী সরকার এর প্রধান আশরাফ ঘানি, যিনি ভারতের দালাল হিসেবে অধিক পরিচিত,তিনি গণজোয়ারের সামনে খালি পায়ে পালিয়ে গেলেও উন্নয়নের ঢোল বাজিয়ে দেশ থেকে পাচার করেছিলেন কয়েক মিলিয়ন ডলার। বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক তাদের সাথে স্যাংশনের ভয়ে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছিল। আফগানরা ইরানি,পাকিস্তানি ও আমেরিকান ডলারের উপর নির্ভরশীল ছিল। অথচ ম্যাজিক্যালি মাত্র ২০ মাসের মধ্যেই তালেবান সরকার সে অবস্থার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখন
আফগান মুদ্রা ডলারের বিপরীতে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মুদ্রা। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ১০০ আফগানি কিনতে বাংলাদেশী টাকায় খরচ হতো ৮০ টাকা। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১০০ আফগানি কিনতে বাংলাদেশের প্রয়োজন হয় ১৫০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ২০ মাসে বাংলাদেশি টাকা আফগানি মুদ্রার বিপরীতে ৮২% মূল্য হারিয়েছে। ( আহা উন্নয়ন! আহা দেশপ্রেম!) আফগানিস্তান এখন প্রতিদিন ১০ হাজার টন কয়লা রপ্তানি করে। আফিম চাষকে দেশ থেকে চিরতরে বিদায় করে উৎপাদন করছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাফরান। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রতি কেজি চার লক্ষ টাকা। আর নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত যে গাড়ি তারা কাতারে উম্মোচিত করেছে তা ইতিমধ্যেই স্মার্টনেস ও গতির জন্য সারাবিশ্বে গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে। সামরিক দিক থেকেও আফগানিরা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আর নিজ দেশকে উপহার দিয়েছে একদল মরণজয়ী মুজাহিদ। স্বাধীনতার ৫২ বছরে কোটি কোটি দেশ প্রেমিকের এই দেশ বিশ্বকে কি দিয়েছে আর নিজেদেরই বা কতটুকু এগিয়ে নিয়েছে (?!)
Comments
Post a Comment